Publish: Tuesday, 9 December, 2025, 10:07 PM

সাপের কামড়ে আক্রান্ত ছয় বছরের শিখা মনিকে বাঁচাতে স্বজনরা একের পর এক হাসপাতালে ছুটেছেন। কিন্তু কোথাও মেলেনি জরুরি অ্যান্টিভেনম (ভ্যাকসিন)। সাভার থেকে শুরু করে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরেও শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মৃত্যু হয় শিশুটির।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির পাশে থেকে শিশু শিখা মনি সাপের কামড়ের শিকার হয়। পরে রাত আটটার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ভাকসিন ও সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা যায় শিশুটি।
শিখা মনি সাভারের ব্যাংক টাউনের নামা গেন্ডা বটতলা এলাকায় জহুরুল ইসলামের মেয়ে। তার বাবা দুবাই প্রবাসী এবং মা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
নিহত শিশুর নানি শাহনাজ বেগম বলেন, ‘আমার প্রতিবন্ধী মেয়ে জেসমিন আক্তারের একমাত্র আদরের সন্তান ছিল শিখা মনি। দুপুরের দিকে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়েছিল। সেখানে তার বাম পায়ে একটি সাপ কামড় দেয়। প্রথমে তাকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। চিকিৎসক একটি ওষুধ দিয়ে বলেন—এটা দুই বেলা খাওয়ালে ঠিক হয়ে যাবে। পরে আমরা তাকে বাসায় নিয়ে আসি। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসক জানান—দ্রুত শিশুটিকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিতে হবে।’
‘যানজটের মাঝে আমরা তাকে সোহরাওয়ার্দীতে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান—তাদের কাছে সাপের বিষের ভ্যাকসিন নেই, দ্রুত মহাখালীতে নিতে হবে। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে মহাখালী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও জানানো হয় ভ্যাকসিন নেই। সারাদিন কষ্ট করে শেষে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক বলেন—শিখা আর বেঁচে নেই। এত বড় দেশে সাপের কামড়ে ভ্যাকসিন না থাকলে আমরা কী করব! এখন তার বাবাকে কী বলব? তার মা নিজেও প্রতিবন্ধী—শুধু তাকিয়ে থাকে আর কান্না করে।’—এ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক চিকিৎসকের বরাত দিয়ে শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ