Publish: Thursday, 30 October, 2025, 11:37 PM				
				
								
				
			 
					
দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ লাগামহীনভাবে বাড়ছে। যা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আগামী বছরের মধ্যে খেলাপি ঋণ কমানোর প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাস্তবে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) গঠন, ব্যবহারের ধরন ও অন্যান্য পুনঃঅর্থায়ন পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মিশন। তবে গোপন রাখা খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকায় সফররত আইএমএফের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব বিষয়ে তাদের আপত্তি ও উদ্বেগের কথা জানায়।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আইএমএফের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রো ইকোনমিকস বিভাগের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক (গ্রেড–১) ড. এজাজুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধি দল জানায়, রিজার্ভ থেকে ইডিএফ গঠনসহ ব্যবহারের ধরন, বিভিন্ন পুনঃঅর্থায়ন ও প্রাক–অর্থায়ন সুবিধা নিয়ে সংস্থাটির দীর্ঘদিনের প্রশ্ন রয়েছে। তারা এসব তহবিলের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান।
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার কথা। তবে গত বছরের আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর গোপন করে রাখা বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশ পেতে শুরু করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায়, মাত্র এক বছরে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা বেড়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকায়। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়েছে, আর বেসরকারি খাতেও তা ১০ শতাংশের বেশি।
বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধি দল মুদ্রানীতির কাঠামো, মূল্যস্ফীতি, সুদের হার, তারল্য সহায়তা, রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা এবং খেলাপি ঋণ কমাতে নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেয়। তারা মূল্যস্ফীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় সন্তোষ প্রকাশ করলেও, অতিরিক্ত সংকোচনমূলক নীতির কারণে বিনিয়োগে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে কিনা—তা জানতে চান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, আইএমএফ ব্যাংক খাতের তারল্য সংকট, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর পুনঃমূলধন, বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের চিত্র, ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতি ও তা কমানোর পদক্ষেপসহ জলবায়ু ও টেকসই বিনিয়োগ এবং সবুজ অর্থায়ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে। একই সঙ্গে আগের সরকারের সময় যে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ গোপন রাখা হয়েছিল, সেটি এখন প্রকাশ পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে ঢাকায় সফররত আইএমএফের মিশন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, ‘আইএমএফের পঞ্চম রিভিউ মিশন নিয়মিত সফরের অংশ হিসেবে তথ্য নিচ্ছে। তারা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপ, সুদের হার নির্ধারণ, রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা এবং খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপের অগ্রগতি সম্পর্কে আগ্রহ দেখিয়েছে।’
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ