ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর- ৪ আসন থেকে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে মহাসড়ক অবরোধ করেছে রেখেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬ টার থেকে শুরু হওয়া অবরোধ কর্মসূচি বেলা ১০ টা গড়িয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। এতে ঢাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গের ২১ টি জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সড়কে আটকে আছে দূরপাল্লার যানবাহন ও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাজার হাজার পথযাত্রী।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সাড়ে ৯ টার পর থেকে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয় অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল। এছাড়াও সকাল ৬ টা থেকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-খুলনা মহাসড়কের মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ডে ও সুয়াদী পাম্প সংলগ্ন এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
অবরোধে আটকে পড়া ট্রাক চালক মালেক শেখ জানান, সকালে পদ্মা সেতু পার হতেই মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে আটকে দেয়া হয় তার ট্রাক। তারা খুলনা মোংলা বন্দর যাওয়ার উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন। সড়কে অবরোধ চলায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য যাচ্ছিলেন কামাল মোল্লা, হাসান শরীফ ও হেমায়েত মাহমুদসহ কয়েকজন। তারা জানান, তারা জানতে না না সড়কে এমন দশা হবে। একদিকে প্রচণ্ড গরম অন্যদিকে অনেক কষ্টে ভ্যানযোগে ও পায়ে হেঁটে চলছেন তারা। এতে পরিবার নিয়ে মারাত্মক ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছেন তারা। তবে ভাঙ্গাবাসীর দাবিকে তারা সমর্থন জানান।
বিক্ষুব্ধকারীরা কয়েকজন জানান, গত ৩ দিনের সময় নিয়েছিলেন স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন। কিন্তু তাদের দাবি পূরণে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাই তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া অনিদ্দৃষ্টকালের জন্য মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন স্লোগানে তাদের প্রতিবাদ জানান, 'রক্ত লাগে রক্ত নে, ভাঙ্গাবাসীর মুক্তি দে'। 'লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে'। 'আমার মাটি আমার মা নগরকান্দায় দেবো না'।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে একটি আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, তাই অবরোধকারীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা ও সড়কে ভোগান্তি নিরসনে যেন তারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করে সড়ক থেকে নেমে যান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা) সার্কেল আসিফ ইকবাল জানান, হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ের ৪ টি পয়েন্টে বিক্ষুব্ধরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে। যদি কোন প্রকারের ভাংচুর, বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চালানো হয় সেসব রোধে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এর আগে গত শুক্রবার একই দাবিতে ৯ ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া অবরোধ কর্মসূচি আজ সকাল থেকে পুনরায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ