Publish: Friday, 5 September, 2025, 11:22 AM

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার বিমান ও স্থল হামলায় আবারও রক্তাক্ত হলো সাধারণ মানুষের জীবন। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে শুরু হওয়া হামলায় একদিনেই অন্তত ৭৫ জন নিহত হয়েছেন। শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৪ জন।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানা ২৩ মাস ধরে চলমান হামলায় গাজা সিটির বহু এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কোথাও আশ্রয় মিলছে না, ফলে পুরো নগরী এখন পরিণত হয়েছে ‘আতঙ্কের নগরীতে’।
তাল আল-হাওয়া এলাকায় একটি তাঁবুতে বিমান হামলায় একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হন, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয় রক্তমাখা শিশুদের স্যান্ডেল। প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী জানান, তাঁবুতে ঘুমানোর সময় হঠাৎ বোমা পড়ে তার পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।
জেইতুন, সাবরা, তুফাহ, নাসর ও শুজাইয়া এলাকায় ভয়াবহ বোমাবর্ষণে বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, কেবল তুফাহ এলাকাতেই নিহত হয়েছেন অন্তত আটজন। শুজাইয়ায় একটি আবাসিকে দুইজনের মৃত্যু হয়। জেইতুন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক পরিবারের তিন সদস্যের মরদেহ।
এদিকে আল-শিফা হাসপাতালে মরদেহে ঠাসা মর্গের বাইরে শোকে ভেঙে পড়া স্বজনদের হৃদয়বিদারক আর্তনাদ শোনা গেছে।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সতর্ক করেছে, প্রায় ১০ লাখ মানুষ এখন আটকা পড়েছেন এই মৃত্যুভয় ও জানাজায় আচ্ছন্ন নগরীতে।
ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, তারা বর্তমানে গাজা সিটির প্রায় ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, অন্তত ৫২টি ইসরায়েলি সামরিক যান জেইতুন এলাকায় মোতায়েন রয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে দক্ষিণ গাজায় আশ্রয় নেওয়া মানুষের দুর্দশাও চরমে পৌঁছেছে। খান ইউনিসে আশ্রিত শরণার্থীরা জানাচ্ছেন, সেখানে না আছে শান্তি, না আছে নিরাপত্তা।
নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলায় নিহত হয়েছেন সাতজন, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু। রাফাহতে ত্রাণ সংগ্রহ করতে আসা মানুষের ওপর গুলি চালালে আরও সাতজন প্রাণ হারান।
একদিনেই নিহত হওয়া ৭৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গাজা উপত্যকাজুড়ে শোক, আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ