Publish: Monday, 14 July, 2025, 3:28 PM

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের স্বচ্ছতা ও আস্থার পরিবেশ নিশ্চিত করতে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথা জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আগামী নির্বাচনে যারা অতীতে অনিয়মে জড়িত ছিলেন, তাদেরকে যথাসম্ভব দায়িত্ব না দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সিইসি এসব কথা বলেন।
সিইসি জানান, বিগত নির্বাচনে যেসব প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ ছিল, তাদেরকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। জেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমরা ব্যাংক কর্মকর্তাদের এই দায়িত্বে আনার চিন্তা করছি। তারা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি কর্মচারী নন এবং অতীতে অনিয়মেও যুক্ত ছিলেন না। এজন্য আমরা তাদেরকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি।
সিইসি আরও জানান, কিছু এলাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের দিতে পারে ইসি। তিনি বলেন, “সংস্কার কমিশনও এই প্রস্তাব করেছে। আমাদের নিজস্ব কর্মকর্তারাও অতীতে সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালনায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ছিলেন। তবে শুধুমাত্র নিজেদের কর্মকর্তা হলেই হবে না, যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়েই নিয়োগ দেওয়া হবে।
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রথমবারের মতো পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, প্রবাসীদের ভোট দিতে হলে আগাম নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস (ডিএইচএল, ফেডেক্স) এর মাধ্যমে।
একেকটি ভোটের খরচ পড়বে প্রায় ৫ হাজার টাকা, যা অনেক ব্যয়বহুল। তবে সরকারি ডাক বিভাগ ব্যবহার করলে খরচ কমে ৭০০ টাকার মতো হবে বলে জানান তিনি।
সিইসি বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর মাত্র ১২ দিনের মতো সময় পাওয়া যায় ব্যালট ছাপা, পাঠানো এবং ফেরত আনার জন্য। এই সময়সীমায় কাজ শেষ করতে গেলে প্রায় ২৪ শতাংশ সিস্টেম লস হতে পারে, আমাদের দেশে সেটি আরও বেশি হতে পারে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি একটি ‘সাইজাবেল নম্বর’ প্রবাসী ভোটারকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে।
এইসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে চায় বলে জানিয়েছেন সিইসি। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যেসব কর্মকর্তা পূর্বে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, তাদেরকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ এবং প্রবাসীদের ভোটে অংশগ্রহণের সুযোগ, উভয়ই নির্বাচনী ব্যবস্থায় নতুন আস্থা সৃষ্টির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ