দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে তিন মাস পর আবারও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় ভারতীয় তিনটি পেঁয়াজবাহী ট্রাক বন্দর এলাকায় প্রবেশ করে। আমদানির খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুচরা বাজারে এক লাফে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমে যায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানি অব্যাহত থাকলে বাজার আরও স্থিতিশীল হবে।
ভারতের নাসিক অঞ্চলের পেঁয়াজ আমদানি করেছে মেসার্স রনি এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির আমদানিকারক আব্দুল মালেক বাবু জানান, অনুমতি পাওয়ার পর ৪০০ ডলার মূল্যে পেঁয়াজ আমদানি করেছেন। তবে এখনও কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় বিক্রি শুরু হয়নি।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা এ আর জামান বাঁধন জানান, সন্ধ্যার পূর্বে তিনটি পেঁয়াজ বোঝাইট্রাক ভারত থেকে বন্দরে প্রবেশ করেছে। ব্যবসায়ীরা শুল্কায়ন ও পরীক্ষণের জন্য আবেদন না করায় কাস্টমসের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি কারক ও হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, আগস্ট মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে তিনিসহ বন্দরের শতাধিক ব্যবসায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। কিন্তু কৃষকের ক্ষতির দিক বিবেচনা করে অনুমতি বন্ধ রাখে সরকার। গত কয়েকদিন থেকে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে পড়ে। এতে ক্রেতা সাধারণ দুর্ভোগে পড়েন। পেঁয়াজের দাম সহনীয় রাখতে রোববার থেকে সীমিত পরিসরে আমদানির অনুমতি দিতে শুরু করেছেন। এদিকে আমদানির খবরে ম্যাজিকের মতো দাম কমায় সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন ক্রেতা সাধারণ।
এক রাতের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা দাম কমাকে অস্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেন এনজিও কর্মী নিলুফা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন সকাল-বিকেল পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এখন আমদানি শুরু হবে-এই খবর শুনেই হঠাৎ দাম কমে গেল। সংকটের অজুহাতে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো দাম বাড়ায়। কোনো সরকারই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না; বারবারই ব্যর্থ হয়।’ রোববার সন্ধ্যায় হিলি বাজারে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেও নিলুফার অভিযোগের সত্যতা মেলে।
খুচরা ব্যবসায়ী মোকারম হোসেন জানান, শনিবার যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। এখন ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মুড়ি কাটা পেঁয়াজের দাম ছিল ১১০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা দরে। তার ভাষ্য হিলি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। সেজন্য পাইকারি ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা পর্যায়ে।
এদিকে একাধিক আমদানিকারকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হিলি স্থল বন্দরের শতাধিক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আমদানি আইপি (অনুমতি পত্র) চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। ইতোমধ্যে অনেকে অনুমতি পেয়ে আমদানি শুরু করেছেন। যাদের অনুমতি মেলেনি তারা ভারতের রপ্তানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছেন। অনুমতি পেলে আমদানি শুরু করবেন।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ