বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫,
১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English हिन्दी

বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
টেকনোলজি
ইন্টারনেটের দাম ২০ শতাংশ বাড়ার আশঙ্কা
নিউজ ডেস্ক
Publish: Sunday, 9 November, 2025, 8:01 AM

‘টেলিকম নেটওয়ার্কিং ও লাইসেন্সিং নীতিমালা ২০২৫’ কার্যকর হলে ইন্টারনেটের দাম অন্তত ২০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল হলিডে ইনে আয়োজিত টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) মতবিনিময় সভায় এই আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন তিনি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন টিআরএনবির সাবেক সভাপতি ও ভিউজ বাংলাদেশ সম্পাদক রাশেদ মেহেদী। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন।

আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ‘বিটিআরসিকে আমরা বারবার সতর্ক করেছি, নীতির নামে যেন দেশীয় উদ্যোক্তাদের ধ্বংসের পথে ঠেলে না দেওয়া হয়। কিন্তু বিদেশি তিনটি অপারেটরকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়েই গাইডলাইন চূড়ান্ত করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে প্রান্তিক পর্যায়ের ইন্টারনেট খরচ কমপক্ষে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং লাখো কর্মসংস্থান হুমকিতে পড়বে। যদি দেশীয় উদ্যোক্তাদের সুরক্ষা ছাড়া নীতিমালা অনুমোদন হয়, তবে আমরা আদালতের শরণাপন্ন হব।’

সামিট কমিউনিকেশনের সিটিও কে এম তারিকুজ্জামান বলেন, ‘২০০৮ সালের আইএলডিটিএস নীতিমালায় যে মনোপলি ভাঙা গিয়েছিল, নতুন গাইডলাইনে আবারও সেই পুরোনো যুগে ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’

ফাইবার অ্যাট হোমের নির্বাহী পরিচালক সুমন আহমেদ সাবির মন্তব্য করেন, ‘সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু তা একতরফা স্বার্থে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের দেশগুলো যেখানে দেশীয় উদ্যোক্তা সুরক্ষায় কাজ করছে, আমরা সেখানে উল্টো পথে হাঁটছি।’

প্রযুক্তি নীতিমালা বিশ্লেষক আবু নাজম মুহাম্মাদ তানভীর হোসেন বলেন, ‘২০০৮ সালের পর এত কম সময়ে এত বেশি ড্রাফট আসা নজিরবিহীন। ৩৩ নম্বর ধারায় পাঁচ মন্ত্রীর কমিটির মাধ্যমে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ লাইসেন্স নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে, এতে বিটিআরসি হয়ে যাবে কেবল নথি প্রক্রিয়াজাতকারী সংস্থা।’

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘টেলিকমের কোন লাইসেন্সটা বা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নয়? সিএলআইপি নামে নতুন সংস্থা গঠনের প্রয়োজনীয়তাও অস্পষ্ট।’

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাসুদ কামাল সরকারের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘এই সরকার নিজের মতোই করছে, কারও কথা শুনছে না। দেশের লাভজনক খাতগুলো বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছে।’

আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘ইন্টারনেট কি আলাদা আলাদা পণ্য? মোবাইল, স্যাটেলাইট, ফাইবার- সবই তো ইন্টারনেটের অংশ। তবু নীতিতে এমন বিভাজন কেন?’

তিনি দাবি করেন, বিদেশি অপারেটরদের ক্রসকাটিং সুবিধা দিয়ে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অসম প্রতিযোগিতায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

আইজি অপারেটর্স ফোরামের নেতা মুশফিক মনজুর বলেন, ‘এরশাদ সরকারের সময়ের ওষুধনীতির মতো যদি দেশীয় স্বার্থ রক্ষায় সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া হতো, তাহলে আজ আমরা বিশ্বমানের ডিজিটাল অবকাঠামো গড়তে পারতাম। জুলাই অভ্যুত্থানের মূল অঙ্গীকার ছিল বৈষম্য দূর করা- কিন্তু নতুন নীতিতে সেই বৈষম্যই গভীর হচ্ছে।’

রাশেদ মেহেদী তার ধারণাপত্রে বলেন, ‘২০০৭ সালে এক বিদেশি অপারেটরের হাতে পুরো বাজার ছিল- ভয়েস, ব্যান্ডউইথ, ট্রান্সমিশন সবকিছু। তখন ১ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথের দাম ছিল ১০ হাজার টাকা। সেই মনোপলি ভাঙতেই ২০০৮ সালের নীতি। কিন্তু আজ আবারও সেই যুগে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

যদিও সরকারের এক বিশেষ সহকারীর পোস্টে নীতিমালায় সংশোধনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, উদ্যোক্তারা বলছেন- ‘সময়ক্ষেপ নয়, বাস্তব সংশোধন চাই।’ 

ডার্ক টু হোপ/এসএইচ
মতামত লিখুন:
http://darktohope.org/ad/1763179181.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
এভারকেয়ারের সামনে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
বৈদ্যুতিক তারের ওপর কাপড়, মেট্রোরেল চলাচল বিঘ্নিত
পানিতে ডুবিয়ে ৮ কুকুরছানা হত্যার অভিযোগে নিশি খাতুন গ্রেপ্তার
ইডেন কলেজ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
টেকনোলজি- এর আরো খবর
Email: [email protected]
© 2024 Dark to Hope
🔝