এক সময় ফেসবুকের অন্যতম জনপ্রিয় ফিচার ছিল ‘পোক’। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি প্রায় হারিয়ে গেলেও আবারও নতুন করে জায়গা করে নিচ্ছে তরুণ ব্যবহারকারীদের কাছে। ব্যবহারকারীদের আগ্রহ বাড়তে থাকায় এবার মেটা পোক ফিচারটিকে আরও গুরুত্ব দিয়ে সামনে আনছে।
এখন থেকে ফেসবুক প্রোফাইলেই থাকবে আলাদা ‘পোক বাটন’, যার মাধ্যমে সরাসরি বন্ধুকে পোক করা যাবে। পোক পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে তা জানানো হবে। এছাড়া ব্যবহারকারীরা চাইলে facebook.com/pokes ক্লিক করে কাকে পোক করছে এবং মোট কতবার পোক হয়েছে, তার হিসাবও দেখতে পারবেন। প্রতিবার পোক করার সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত হবে ‘পোক কাউন্ট’, যা বন্ধুদের সঙ্গে ভার্চুয়াল যোগাযোগের গভীরতা বোঝানোর চেষ্টা করবে। চাইলে ব্যবহারকারী কোনো পোক এড়িয়ে যাওয়ারও সুযোগ পাবেন।
এই নতুন ফিচার বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মকে মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। কারণ, তারা স্ন্যাপচ্যাট ও টিকটকের মতো অ্যাপে গ্যামিফিকেশন ফিচারের সঙ্গে অভ্যস্ত। যেমন স্ন্যাপচ্যাটে প্রতিদিন যোগাযোগ ধরে রাখলে ‘স্ট্রাইকস’ জমে তেমনি ফেসবুকের পোক কাউন্টও ব্যবহারকারীদের নিয়মিত সক্রিয় রাখার একটি কৌশল।
মার্চ ২০২৪-এ ফেসবুক প্রথমবারের মতো পোক পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেয়। তখন বন্ধুর নাম সার্চ করার পর সরাসরি পোক দেওয়ার সুবিধা চালু করা হয়। মেটার দাবি, সে সময় মাত্র এক মাসে পোক ব্যবহার বেড়ে যায় ১৩ গুণ।
তবে পোক আসলে কেন ব্যবহার করা হয়, সে বিষয়ে ফেসবুক কখনো নির্দিষ্ট কিছু বলেনি। কারও মনোযোগ আকর্ষণ, বন্ধুকে মজা দেওয়া কিংবা কখনো বিরক্ত করার জন্যও এই ফিচার ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
বিশ্লেষকদের মতে, তরুণ প্রজন্মের মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাব গভীরভাবে জড়িত। গবেষক জন হেইডট এবং এনওয়াইইউ স্টার্নের জ্যাক রাউশের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, স্ন্যাপচ্যাট নিজেও জানত ‘স্ট্রাইকস’-এর আসক্তিমূলক বৈশিষ্ট্যের কথা।
যদিও ফেসবুক এখনো মেটার সবচেয়ে বড় আয়ের উৎস, তবে নতুন প্রজন্মকে ধরে রাখতে তাদের সংগ্রাম দীর্ঘদিনের। কলেজভিত্তিক ‘ফেসবুক ক্যাম্পাস’ ফিচার চালু করেও ২০২২ সালে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নতুনভাবে জেনারেশন জেড প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে ফেসবুক নানা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিচ্ছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ