শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫,
২১ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English हिन्दी

শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাতীয়
ধানের নতুন পাঁচটি জাত উদ্ভাবন
নিউজ ডেস্ক
Publish: Friday, 5 September, 2025, 11:23 AM

ধানের আরো পাঁচটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা। মাঠ পর্যায়ে এই জাতগুলো ব্যাপক সাফল্যও পেয়েছে। আগামী সপ্তাহে এটি কারিগরি কমিটির সভায় উপস্থাপনের পর জাতীয় বীজ বোর্ডে অনুমোদনের জন্য দেওয়া হবে। অনুমোদন পেলে কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর জাতগুলো কৃষকদের কাছে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ব্রির উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার (সিএসও) ও প্রধান ড. খোন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা জানিয়েছেন, এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।

ব্রির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে উদ্ভাবিত ১১৪টি জাত রয়েছে। নতুন এই পাঁচটি জাত অনুমোদনের পর এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১১৯টিতে। এ ধানগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ ধান, লবণাক্ত সহনশীল, শীতল সহনশীল, বোরো মৌসুমে উচ্চ ফলনশীল ও ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইট সহনশীল জাত।

দীর্ঘ গবেষণা শেষে ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ নতুন জাতটি উদ্ভাবন করেছে ব্রি, এর প্রস্তাবিত নাম ব্রিধান-১১৫। এতে ১৫ পিপিএম মাত্রার ভিটামিন-ই পাওয়া যাবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভিটামিন-ই আমাদের দেহের জন্য অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে, কোষকে ক্ষয় ও বয়সজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে। এ ছাড়া এটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে।ধানের ব্যাকটেরিয়াজনিত ব্লাইট একটি বিধ্বংসী রোগ। এটি ধানের পাতা ও শীষে আক্রমণ করে, যার ফলে পাতা বিবর্ণ ও ঝলসানো হয়ে যায় এবং শীষ সাদা বা বাদামি হয়ে জন্য ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইট সহনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে ব্রি, যার প্রস্তাবিত নাম ব্রিধান-১১৬। এটি তুলনামূলকভাবে ব্রিধান-১১৩-এর চেয়ে বেশি ফলন দেয়। ব্রিধান-১১৩-এর ফলন ছিল ৮.১৫ টন। নতুন জাতে প্রতি হেক্টরে ফলন ৯.১ টন।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ধান চাষের প্রধান বাধা হলো লবণযুক্ত মাটি। এ কারণে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে আসছেন। এরই মধ্যে সাত থেকে আটটি লবণ সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত এই জাত ব্রিধান-১১৭ অতিমাত্রার লবণ সহ্য করতে পারবে এবং ফলনও বেশি দেবে। এর জীবনকাল কম, কিন্তু প্রতি হেক্টরে ফলন এক টন বেশি।

ব্রি’র উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ড. ইফতেখারুদ্দৌলা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যে ধান চাষ হয়, তার মধ্যে বোরো চাষের এলাকা ৫৩ শতাংশ। এর মধ্যে ২০ শতাংশ হাওর এলাকায় অবস্থিত। ফলে হাওর এলাকার ধানে ফলন বাড়ানো এবং ক্ষতি কমাতে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করা হয়েছে। প্রজনন অবস্থায় এবং ফুল আসার সময় যদি তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকে, ধান চিটা হয়ে যায়। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে শীতল সহনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর প্রস্তাবিত নাম ব্রিধান ১১৮।

বিজ্ঞানীরা বলেন, হাওর এলাকায় বোরো ধান চাষে শীতের মূল সমস্যা হলো ঠাণ্ডাজনিত ক্ষতি, যেখানে ধানের চারায় কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধানগাছ ঠাণ্ডায় কাতর হয়ে পড়ে, এতে ফলন কমে যায়।

বোরো মৌসুমে দীর্ঘ জীবনকালের নতুন জাতের প্রস্তাবিত নাম ব্রিধান-১১৯। এর ফলন ব্রিধান-৮১-এর চেয়ে এক টন বেশি। ড. ইফতেখারুদ্দৌলা বলেন, যেসব এলাকায় একটি বোরো ফসল চাষ হয়, সেখানে এই ধান উপযুক্ত। এর জীবনকাল ১৬০ দিন।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন জানান, দেশের ধান উৎপাদন বর্তমানে চার কোটি টনেরও বেশি। এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য একটি বড় অর্জন। তবে জলবায়ুর পরিবর্তন ক্রমশ নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তীব্র গরম, অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত এবং শীতের প্রভাব ধানের উৎপাদনকে প্রভাবিত করছে। পাশাপাশি নতুন ধরনের পোকার আক্রমণও চাষিদের সমস্যায় ফেলছে। এসব বাধা কাটাতে বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে নতুন জাত উন্মোচন করছেন। এই নতুন জাতগুলো রোগ প্রতিরোধী এবং পরিবেশ সহনশীল।

ডার্ক টু হোপ/এসএইচ
মতামত লিখুন:
https://www.darktohope.org/ad/1731844310_left-banner.gif

সর্বশেষ সংবাদ

ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
এসএসসি পরীক্ষায় বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ
গুরুত্ব হারিয়েছে রোহিঙ্গা সংকট, রাখাইনে করিডর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান টম এন্ড্রুজের
ফের জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুর, আগুন
ব্রিটেনের উপপ্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, কর ফাঁকির অভিযোগ
জাতীয়- এর আরো খবর
Email: [email protected]
© 2024 Dark to Hope
🔝