শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫,
২১ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English हिन्दी

শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাতীয়
থামছে না মব সন্ত্রাস, আক্রান্ত ব্যক্তিই হচ্ছেন আসামি
নিউজ ডেস্ক
Publish: Friday, 5 September, 2025, 8:35 AM

দেশে বিচারবহির্ভূত হামলা বা মব সন্ত্রাস উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত এর শিকার হচ্ছেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে উল্টো আক্রান্ত ব্যক্তিদেরই গ্রেপ্তার ও মামলার আসামি করা হচ্ছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

মব সন্ত্রাসের ধরন

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে বিভিন্ন জেলা–উপজেলায় শুরু হয় এ ধরনের ঘটনা। দেখা গেছে, দাবি আদায় বা প্রতিপক্ষকে হেয় করার উদ্দেশ্যে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে কিছু গোষ্ঠী। অনেক শিক্ষক–শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতা, এমনকি আদালতের সামনে সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের ওপরও হামলা হয়েছে।

আলোচিত কয়েকটি ঘটনা২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চুরির অভিযোগে এক ভবঘুরেকে পিটিয়ে হত্যা করে শিক্ষার্থীরা।একই দিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামিম আহমেদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।২২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়।২০২৫ সালের ২৯ এপ্রিল ঢাকায় অভিনেতা সিদ্দিককে মারধরের পর তার বিরুদ্ধেই মামলা হয়।২২ জুন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাকে মারধরের পর তাকেও আসামি করা হয়।এছাড়া সাবেক মন্ত্রী–এমপি, সাংবাদিকসহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি ও শিক্ষক মব হামলার শিকার হয়েছেন।

সম্প্রতি ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২–এ রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে মারধরের পর তার বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের হয়, যা দেশজুড়ে সমালোচনার জন্ম দেয়। আবার ২৯ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেওয়া সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জনকে লাঞ্ছিত করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়, পরে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়।

প্রতিক্রিয়া

মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেছেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীর বিচার না করে ভুক্তভোগীকেই গ্রেপ্তার করছে। এতে দেশে আইনের শাসন সুদূরপরাহত হচ্ছে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা মনে করেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও দুর্বল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিই এ প্রবণতার কারণ।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিবাদ সবার অধিকার। তবে আইন হাতে তুলে নেওয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথকে দুর্বল করে।”

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ মনে করেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলকেই নিজেদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচারবহির্ভূত এই আচরণ যদি দ্রুত বন্ধ না হয়, তবে এটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নেবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা, অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এ প্রবণতা ঠেকানো সম্ভব।

ডার্ক টু হোপ/এসএইচ
মতামত লিখুন:
https://www.darktohope.org/ad/1731844310_left-banner.gif

সর্বশেষ সংবাদ

ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
এসএসসি পরীক্ষায় বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ
গুরুত্ব হারিয়েছে রোহিঙ্গা সংকট, রাখাইনে করিডর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান টম এন্ড্রুজের
ফের জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুর, আগুন
ব্রিটেনের উপপ্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, কর ফাঁকির অভিযোগ
জাতীয়- এর আরো খবর
Email: [email protected]
© 2024 Dark to Hope
🔝