বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় ও বৈশ্বয়িক নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অবস্থিত সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাবেক এমপি পাওলো কাসাকা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ও মানবাধিকার সুরক্ষার অবস্থা দিন দিন নাজুক হয়ে পড়ছে।
তারা সাম্প্রতিক ২৯ আগস্ট ঢাক রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাসহ অংশগ্রহণকারীদের ওপর সংঘবদ্ধ হামলার নিন্দা জানান। নাগরিক সমাজের মতে, গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে দেশে মবতন্ত্র তৈরি করে বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলার মাত্রা ক্রমশ বেড়ে চলেছে; যা গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশ, নাগরিক স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির জন্য হুমকি তৈরি করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাসহ অতিথিদের লাঞ্ছিত ও হামলার শিকার হতে হয়। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয় এবং উল্টো ১৬ জন অংশগ্রহণকারীকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয় এবং জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। নাগরিক সমাজের দাবি, এটি আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন, যা আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত চুক্তির (আইসিসিপিআর) অনুচ্ছেদ ৯ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
প্রতিনিধিরা বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপদে মতপ্রকাশ, সমাবেশ এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হয়রানি, সহিংসতা বা ভিন্নমত দমনের কোনো সুযোগ নেই।
তাদের প্রধান দাবিগুলো হলো:
অন্যায়ভাবে আটক সব ব্যক্তিকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
সহিংসতা সংগঠিত ও পরিচালনাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে বাংলাদেশের অঙ্গীকারসমূহ মেনে চলতে হবে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ