রাজধানীর কাওরান বাজারে অবস্থিত দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠানটির অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মানববন্ধন করেছেন কর্মীরা। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে কাওরান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় প্রথম আলোর প্রধান কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন পত্রিকাটির সাংবাদিকরা।
তাদের মতে, এই হামলার উদ্দেশ্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা।
মানববন্ধনে পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত ও সংগঠিত হামলা, যা সরাসরি সাংবাদিকদের জীবনের জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে হামলার সময় কর্মীদের নিউজরুম ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হতে হয়। ফলে পত্রিকার প্রকাশনা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, প্রথম আলোর ২৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম পত্রিকাটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।
সাজ্জাদ শরীফ এই হামলাকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ভিন্নমত ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এটি শুধু প্রথম আলোর ওপর হামলা নয়। দ্য ডেইলি স্টারও লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। এটি বাংলাদেশের গণমাধ্যম, বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য একটি কালো দিন।
তিনি হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে সাংবাদিক সমাজ ও গণমাধ্যমের পাশে দাঁড়াতে নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের দিকে প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা হয়। হামলাকারীরা ভবনের সামনে আগুন ধরিয়ে দেয়, ভাঙচুর চালায় এবং প্রথম আলো ও ভারতের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই এই হামলার ঘটনা ঘটে।
মানববন্ধনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকসহ পত্রিকার জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ সাংবাদিকরা অংশ নেন।
এদিকে মানববন্ধন চলাকালে প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে আবারও কিছু ব্যক্তি জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। তারা প্রথম আলোর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং বৃহস্পতিবারের হামলাকে সমর্থন জানিয়ে পত্রিকার সাংবাদিকদের ‘দালাল’ বলে আখ্যা দেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ সরিয়ে দেন।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ