গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় অন্তত তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ বুধবার বিকেল ৫টার দিকে গোপালগঞ্জ আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল তিনজনের নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতেরা হলেন দীপ্ত সাহা (২৫), রমজান কাজী (২৪) ও ইমরান তালুকদার (১৮)। ডা. শেখ মো. নাবিল বলেছেন, নিহত তিনজনই গুলিবিদ্ধ ছিলেন। তবে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক নিহতের বিস্তারিত পরিচয় জানাতে পারেননি।
দিনভর সংঘর্ষের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসক। এরপর আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো জেলায় কারফিউ জারি করে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের ঘোষণায় বলা হয়, সারা জেলায় বুধবার রাত ৮ টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে।
এদিকে, পুলিশ–আওয়ামী লীগ সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের কড়া পাহারায় গোপালগঞ্জ ছেড়েছেন এনসিপির নেতারা। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বিকেল ৫টা পরে তারা গোপালগঞ্জ ছেড়ে বের হয়ে যান।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কড়া পাহারায় এনসিপির নেতারা ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়েন। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা রয়েছেন।
এদিকে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সেনাবাহিনীর এপিসিতে উঠছেন নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস। ভিডিওটিতে দাবি করা হয়েছে, এই এপিসিতে করেই গোপালগঞ্জ ছেড়েছেন এনসিপির এই শীর্ষ নেতারা। তবে ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বুধবার আনুমানিক ৩টার দিক থেকে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় থেকে সংঘাত শুরু হয়। এ সময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। গোপালগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ৪ প্লাটুন বিজিবি ও সেনাবাহিনী।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে দেখা গেছে। এ সময় নেতা-কর্মীদের গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে এনসিপি নেতাদের নিয়ে পিছু হটতে দেখা গেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে এবং থেমে থেমে মহাসড়কে সংঘর্ষ হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়েছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ