পূর্ব শত্রুতার জেরে শরীয়তপুরের পালং উপজেলায় দেলোয়ার নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ইসমাইল সরদার, ছালমুল সরদার, আমিনুল সরদার, রেজাউল সরদার ও জুয়েল সরদার। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মজিবুর সরদারসহ ১২ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
এদিন আসামি ছালমুন সরদার ও আমিনুল সরদার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া অপর আসামিরা জামিনে পলাতক ছিলেন। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পনোয়ানা ইস্যু করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের ট্রাইব্যুনালের কৌঁশলি গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী সৈয়দ নাজমুল হুদা। নাজমুল হুদা রায়টি দ্রুক কার্যকরের দাবি জানান।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে পূর্ব শত্রুতার জেরে দেলোয়ার হোসেন ও দুলাল সরদার সুবচনি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পশ্চিম চররোসুদ্ধির পাকা রাস্তায় পৌঁছালে ৩১ জন নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আসামি পরিকল্পিতভাবে অটোরিকশার গতিরোধ করে। এরপর দেলোয়ারকে নামিয়ে লোহার রড, হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। দুলাল সরদার তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে ও মারধর করে জখম করা হয়। ভাগ্নি পারভীন আক্তার বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে আশপাশের লোকজন এসে আহতদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয় এবং দেলোয়ারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই দেলোয়ার হোসেন সরদারের বাবা আব্দুস সালাম সরদার বাদী হয়ে শরীয়তপুর জেলার পালং মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলার পিবিআই পুলিশের পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন ১৮ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ পাঠানো হয়। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধ গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
মামলার বিচার চলাকালে এক আসামি মারা যাওয়ায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম চলে। এ মামলায় মোট ৩১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ