রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫,
২৯ আষাঢ় ১৪৩২
বাংলা English हिन्दी

রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
অর্থনীতি
বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে ৭ শতাংশের নিচে
নিউজ ডেস্ক
Publish: Wednesday, 2 July, 2025, 11:55 AM

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির সুদহার বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বেসরকারি খাতের ওপর। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহার বেশি হওয়ায় উচ্চ সুদের বোঝা বহনের আগ্রহ দেখাচ্ছে না উদ্যোক্তারা। এতে শিল্প, ব্যবসা ও উৎপাদন খাতের সম্প্রসারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার কারণে ঋণে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের মে শেষে বার্ষিক ভিত্তিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যেখানে গত বছর একই সময়ে এ হার ছিল ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর আগে চলতি বছর জানুয়ারিতে ছিল ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর করোনা অতিমারীর পর ২০২১ সালের মে মাসে একবার বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে নেমেছিল।

গবেষকরা বলছেন, বর্তমান কঠোর মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সহায়ক হলেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহে। নীতি সুদহার ও ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদের কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন, ফলে অর্থনীতির গতি ধীর হচ্ছে। এদিকে সরকারের রাজস্ব আয় কম থাকায় ব্যাংক থেকেই বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে, যার কারণে বেসরকারি খাত আরও চাপের মুখে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজস্ব আয় বাড়ানো ও বাজেট ঘাটতি কমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। পাশাপাশি বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে সহজ ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণের সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন বলে করেন অনেক বিশ্লেষক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, নতুন অর্থবছরের জন্য ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। তথ্য বলছে, বর্তমান আর্থিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেসরকারি খাতের ঋণ চাহিদা প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি। এর পেছনে একদিকে যেমন উচ্চ সুদের প্রভাব কাজ করছে, অন্যদিকে সরকারের বাড়তি ঋণ গ্রহণ এবং ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটও ভূমিকা রাখছে।

বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদের হার বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করেছে, যা আগের তুলনায় অনেক বেশি। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহারও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ। যেখানে একসময় এ হার ছিল ৮ থেকে ৯ শতাংশ। সুদের এ ঊর্ধ্বগতি ব্যবসায়িক ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে, যার ফলে মুনাফা কমছে এবং ঝুঁকি বাড়ছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয় ও তরল সম্পদ ধরে রাখাকেই বেশি নিরাপদ মনে করছেন। ফলে বাজারে বিনিয়োগ-প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে এবং ব্যাংক খাতে ঋণের প্রবাহে স্থবিরতা দেখা দিচ্ছে।

অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আহরণ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে না পৌঁছানোর ফলে ব্যাংক খাত থেকেই ঘাটতি পূরণের জন্য সরকারকে অধিক হারে ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বেসরকারি খাতের চেয়ে সরকারি ঋণ পূরণে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, যা বেসরকারি খাতের জন্য ক্রেডিট ডিসপ্লেসমেন্ট বা ঋণচ্যুতি সৃষ্টি করছে। অর্থাৎ সরকারের অতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার কারণে বেসরকারি খাত প্রয়োজনীয় অর্থায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদিও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার নিচে অবস্থান করছে, তবুও সরকারের ঋণ চাহিদা মেটাতে গিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় নিট অভ্যন্তরীণ সম্পদের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। তবে সার্বিকভাবে অভ্যন্তরীণ ঋণের হার কমেছে, যা একটি দ্বিমুখী চাপের নির্দেশক।

ডার্ক টু হোপ/এসএইচ

মতামত লিখুন:
https://www.darktohope.org/ad/1731844310_left-banner.gif

সর্বশেষ সংবাদ

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরো শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত
আড়াই মাস পর বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ ফেরত দিলো বিএসএফ
মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর হামলা চালাল বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা
মিয়ানমারে বৌদ্ধ মঠে বিমান হামলায় নিহত ২৩
ইইউ-মেক্সিকোর পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা ট্রাম্পের
অর্থনীতি- এর আরো খবর
Email: [email protected]
© 2024 Dark to Hope
🔝