সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতের পরিবর্তে পরিবেশকে আরও সহিংসতার মুখে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা। বলছেন, এর অপব্যবহার জনসাধারণকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে। তাই এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সামনে আসে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের নিরাপত্তার ইস্যুটি। এরপরই রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং নির্বাচনে প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ও সশস্ত্র রক্ষী নিয়োগে সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে সরকার।
নির্বাচন কমিশন বলছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নীতিমালায় লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্যতায় বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। ব্যক্তিগত আয়কর সংক্রান্ত অংশ এ ক্ষেত্রে শিথিল থাকবে। যদিও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে আবেদনকারীকে বছরে কমপক্ষে দুই লাখ টাকা আয়কর দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
নীতিমালায় এমন ছাড়ের বিরোধিতা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না করে এ ধরনের বিকল্প হতে পারে আরও বিপজ্জনক।
নির্বাচন কমিশনের সাবেক যুগ্ম সচিব (আইন) ড. শাহজাহান সাজু বলেন, নিজের নিরাপত্তার জন্য অস্ত্রের ব্যবহার হলে সেটা ভালো ব্যবহার, তেমন সেটার অপব্যবহারও হতে পারে। তা না হলে অস্ত্র আইন হতো না।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খান বলেন, অনেক প্রার্থীই জানেন, তারা হবেন না। অস্ত্রের লাইন্সের জন্যও অনেকে প্রার্থী, এ ক্ষেত্রে তো নাগরিকদের নিরাপত্তা থাকে না।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে বৈধ অস্ত্রও রাখা যায় না। সেখানে প্রার্থীদের কাছে অস্ত্র রাখা হিতে বিপরীত হতে পারে।
ফেমা সভাপতি মুনিরা খান বলেন, নির্বাচনে দু–একটা সহিংসতা পৃথিবীর সব দেশেই হয়। সেক্ষেত্র বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রার্থীর হাতে বা তার গানম্যানের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া ভুল হবে। সহিংসতার পথ খুলবে।
ঢালাওভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হলে তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ