Publish: Tuesday, 2 December, 2025, 8:00 AM

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ থামাতে শান্তি আলোচনায় কিয়েভের প্রধান লক্ষ্য দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাওয়া।
তিনি বলেন, আলোচনায় ভূখণ্ড প্রশ্নই সবচেয়ে জটিল। কারণ এখনো দনবাসের যে অংশ ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে আছে তা ছেড়ে দিতে চাপ দিচ্ছে রাশিয়া। কিয়েভ বলছে, এটি তারা কখনোই মেনে নেবে না। খবর বিবিসির।
প্যারিসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকের পর জেলেনস্কি এ কথা বলেন। সেখানে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, পোল্যান্ড ও ইতালিসহ ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গেও তিনি আলোচনায় অংশ নেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের আলোচকরা ফ্লোরিডায় দুই দিন ধরে একটি সংশোধিত শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শেষ করেন। প্রস্তাবটি নিয়ে ইউক্রেনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে, কারণ সেটি রাশিয়ার অবস্থানকে সুবিধা দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।
হোয়াইট হাউস আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, তারা সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে ‘খুব আশাবাদী’। তবে জেলেনস্কি বলেন, আলোচনা “গঠনমূলক” হলেও এখনো “কয়েকটি কঠিন বিষয়” সমাধান বাকি রয়েছে।
এদিকে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে মস্কোর পথে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও জামাতা জ্যারেড কুশনারও থাকবেন। উইটকফ ইতোমধ্যে জেলেনস্কি, ম্যাক্রোঁ, ইউক্রেনের আলোচক রুস্তেম উমেরভ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে কথা বলেছেন। এসব আলোচনার সারসংক্ষেপ তিনি পুতিনকে জানাবেন।
গত সপ্তাহে পুতিন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের যে খসড়া শান্তি প্রস্তাব দেখিয়েছে, তা ভবিষ্যৎ চুক্তির ভিত্তি হতে পারে। তবে ম্যাক্রোঁ বলছেন, এখনো চূড়ান্ত কোনো শান্তি পরিকল্পনা তৈরি হয়নি এবং কোনো প্রস্তাবই ইউক্রেন ও ইউরোপকে পাশ কাটিয়ে তৈরি করা যাবে না।
ইউরোপীয় দেশগুলো আলোচনায় নিজেদের ভূমিকা নিশ্চিত করতে তৎপর। তারা বলছে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, রুশ সম্পদ, এবং ইউক্রেনের ইইউ-সদস্যপদ এসব বিষয়ে ইউরোপের সরাসরি অংশগ্রহণ জরুরি।
যুদ্ধ-পরবর্তী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বিশেষ করে সম্ভাব্য ন্যাটো সদস্যপদ নিয়েও বড় মতবিরোধ রয়েছে। কিয়েভ ও ইউরোপ মনে করে, ভবিষ্যৎ হামলা ঠেকাতে শক্ত গ্যারান্টি প্রয়োজন। কিন্তু রাশিয়া এর বিরোধী, এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের পক্ষে নন।
এদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। সোমবার সকালে দ্নিপ্রো শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চার জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে।
প্যারিসে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা মরিয়া চেষ্টা করছি এই যুদ্ধ সম্মানের সঙ্গে শেষ করতে। এই যুদ্ধ রাশিয়াই শুরু করেছে, তাই শেষ করাটাও তাদেরই দায়িত্ব।’
এমন সময়ে জেলেনস্কির প্রশাসন দুর্নীতির ঘটনায় চাপে আছে। দুর্নীতি দমন কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্টের দফতরের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাকের বাসায় অভিযান চালানোর পর তিনি পদত্যাগ করেন। যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। দুই মন্ত্রীকেও পদ থেকে সরানো হয়েছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ