Publish: Monday, 17 November, 2025, 10:27 PM

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে অভিযোগ করেছেন, তাকে বা তার দলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও ‘ন্যায্য সুযোগ’ দেওয়া হয়নি।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে এসব মন্তব্য করেন তিনি। খবর এনডিটিভির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। রাজসাক্ষী হিসেবে থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও কামালের অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করে। ৫ অগাস্টের পর থেকে তারা ভারতে অবস্থান করায় তাদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী।
রায়ের নিন্দা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এটি একটি অনির্বাচিত সরকারের উগ্রপন্থি ব্যক্তিদের বেপরোয়া ও হত্যার মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।”
তিনি আরও বলেন, যে পাঁচটি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল, তার সবগুলোই ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ এবং ‘অস্বীকারযোগ্য’।
বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, “আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমার অনুপস্থিতিতে যে বিচার হয়েছে, সেখানে আমার পছন্দের কোনো আইনজীবীও ছিলেন না। নামের মধ্যে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দ থাকলেও আইসিটিতে আন্তর্জাতিক বলে কিছু নেই। এ আদালত নিরপেক্ষও নয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, যেসব বিচারপতি ও আইনজীবী তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছিলেন, তাদের হয় অপসারণ করা হয়েছে, নয়তো ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কেবল আওয়ামী লীগের লোকজনের বিরুদ্ধেই মামলা করেছে,” বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ অন্যদের ওপর সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি এই ট্রাইব্যুনাল।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সম্পর্কে তিনি বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূসের বিশৃঙ্খল, সহিংস ও সমাজকে পেছনে টেনে নেওয়া প্রশাসনের অধীনে কোটি মানুষ দুঃখ–কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের বোকা বানানো যাবে না। তারা দেখছেন, এই ট্রাইব্যুনালের বিচার ন্যায়বিচারের জন্য নয়—এর উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগকে বলির পাঁঠা বানানো এবং ড. ইউনূসের ব্যর্থতা থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়া।”
তার দাবি, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, এনজিও এবং আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থার বিশ্লেষণও একই সত্য প্রমাণ করছে। তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের একজন মানুষও তাকে (ইউনূস) সমর্থন জানাননি।”
বিচারের মুখোমুখি হতে ভয় নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ন্যায়বিচারের জন্য যথাযথ আদালতে সব নথিপ্রমাণ নিরপেক্ষভাবে যাচাই হওয়া জরুরি। তিনি যোগ করেন, “এ কারণেই অভিযোগগুলো হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উপস্থাপন করতে আমি বারবার অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছি।”
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ