সারা দেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, কোরবানির ত্যাগ ও পারস্পরিক সহমর্মিতার মহৎ বার্তা নিয়ে উদযাপিত হচ্ছে মুসলিমদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব—পবিত্র ঈদুল আজহা। শনিবার (৭ জুন) সকাল থেকে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে।
রাজধানী ঢাকা ছাড়াও সারাদেশের মসজিদ ও ঈদগাহে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত। জাতীয় ঈদগাহে রাজধানীর প্রধান জামাতে অংশ নেন হাজার হাজার মুসল্লি। নামাজ শেষে পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর শুরু হয় কোরবানির প্রস্তুতি।
ঈদের মূল অনুষঙ্গ পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গলি-মহল্লা, বাসার আঙিনা এবং খোলা স্থানগুলোয় দেখা গেছে ব্যস্ততা। গরু, ছাগল, মহিষ ইত্যাদি জবাইয়ের পর কসাইয়ের সহায়তায় দ্রুততার সঙ্গে চলছে মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ।
বহু পরিবার ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী মাংস তিন ভাগ করে আত্মীয়-স্বজন, দরিদ্র ও নিজের জন্য বণ্টন করছে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিচ্ছে, যাতে ঈদের আনন্দে কেউ বঞ্চিত না থাকে।
চলতি বছর কোরবানির পশু জবাই ও পরবর্তী বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিয়েছে আগাম প্রস্তুতি। নগরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ছুটি বাতিলসহ বর্জ্য অপসারণে মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষ বাহিনী।
সিটি করপোরেশনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ঈদের দিন দুপুরের মধ্যেই অধিকাংশ ওয়ার্ডে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং রাতের মধ্যেই তা সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই প্লাস্টিক ও বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ সরবরাহ করেছে নগরবাসীর কাছে, যাতে বর্জ্য সহজে ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে অপসারণ সম্ভব হয়।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। তারা ঈদের ত্যাগের মহিমা ও মানবিক মূল্যবোধ ধারণ করে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
ঈদুল আজহা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি ত্যাগ, সহমর্মিতা ও সাম্যচেতনার প্রতীক। এবারের ঈদে রাজধানীসহ সারাদেশে যে শৃঙ্খলাপূর্ণ ও মানবিক পরিবেশে কোরবানির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ