ভোলায় বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা জামায়াতের তিনটি দোকান ভাঙচুর করেছে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়দলের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও নৌ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার ভেলামিয়া ইউনিয়নের বিশ্বরোড বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সন্ধ্যার পর জামায়াতের নেতাকর্মীরা গণসংযোগে বাজারের নেমেছেন। এ সময় বিএনপি'র নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে রাজাকার রাজাকার বলে স্লোগান দিয়ে জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এই সময় আত্মরক্ষার জামায়াতের নেতাকর্মীরাও পাল্টা হামলা চালায়। এতে করে দুইগ্রুপের মধ্যে লেগে যায় তুমুল সংঘর্ষ ধাওয়া-পালটা ধাওয়া। এ সময় উভয়গ্রুপের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়। এ সময় উত্তেজিত বিএনপি নেতাকর্মীরা তোর এলাকায় জামায়াতের তিনটি ব্যবসার প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
এ ব্যাপারে ভেলুমিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মাস্টার মো. আব্দুল হান্নান জানান, সকালের দিকে আমাদের একটি বিজয় র্যালি করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। সে সময় তাদের তাদের দুজন কর্মী আহত হয়। তাদের মধ্যে একজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেই ঘটনার জেরে মাগরিবের নামাজ শেষে তাদের লোকজন বাজারের বিভিন্ন দোকানে বসে আলোচনাকালে সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে বেঁধে যায় সংঘর্ষ। বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের তিনটি ব্যবসার প্রতিষ্ঠানে হামলা লুটপাট ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে, ভেলুমিয়া ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি ইউনুস খান কমান্ডার জানান, জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিএনপি'র লোকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে করে ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা ইউনিয়নের বিভিন্ন দিক থেকে চলে আসলে এরপর দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
এদিকে, ঘটনার পরপরই ভোলা সদরের ওয়েস্টার্ন পাড়া এলাকার জামায়াতের প্রধান কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদর উপজেলার জামায়াতের আমির মাওলানা কামাল হোসেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা অহেতুক জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। গতকাল সোমবার চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগর ইউনিয়নে জামায়াতের গণসংযোগকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের ২০ জন নেতাকর্মীকে আহত করে।
একইভাবে আজ সকালে দৌলতখানে বিজয় দিবসের প্রোগ্রামের চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা জামায়াতের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। এতে করে তাদের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়। একইভাবে সকালে ভেলুমিয়া বাজারে বিএনপি নেতা কর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
এই ঘটনার রেশ ধরে সন্ধ্যার পর বিএনপি লোকজন পুনরায় তাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। দুই দিনের ঘটনা এখন পর্যন্ত তাদের ১৫ নেতাকর্মী জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। তারা এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ