Publish: Friday, 12 December, 2025, 1:20 AM

গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় একাধিক খুন ও বহু পথচারী আহত হওয়ার পর রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের পাঁচটির মধ্যে তিনটি সিঁড়ি বন্ধ করে দিয়েছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। পুলিশ বলছে, সিসি ক্যামেরা ও প্রয়োজনীয় আলো না থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে এসব সিঁড়ি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিআরটি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার মহাসড়কের যানজট দূর করতে ২০১২ সালে হাতে নেওয়া হয় বিআরটি প্রকল্প। আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার ফ্লাইওভারের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর সম্প্রতি সরকার বিআরটি’র এ অংশের প্রকল্পটি আপাতত বন্ধ করে দেয়। এরপর টঙ্গীবাসী ফ্লাইওভারসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চার লেন খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু এখনো চারটি লেন পুরোপুরি চালু হয়নি। এ অবস্থায় আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর স্টেশন রোড ও চেরাগআলী পর্যন্ত ফ্লাইওভারে বেড়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে ফ্লাইওভার থেকে নিচে নামার সিঁড়িগুলোতে ছিনতাই বেশি হচ্ছে। আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত মোট পাঁচটি সিঁড়ি রয়েছে। পথচারীদের ফ্লাইওভার থেকে নিচে নামার সুবিধার জন্য এগুলো নির্মাণ করেছিল বিআরটি কর্তৃপক্ষ।
ফ্লাইওভারে সম্প্রতি সংঘটিত ছিনতাইয়ের বিবরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোনো যাত্রী গাড়ি থেকে নামার পর ছিনতাইকারীরা তাকে ফ্লাইওভারের ওপর থেকে ধাওয়া করে সিঁড়িতে এনে কুপিয়ে হতাহত করে, অথবা সিঁড়ি দিয়ে ফ্লাইওভারে ওঠার সময় আক্রমণ করে। এভাবে একাধিক হতাহতের ঘটনার পর সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বিচারের দাবিতে আন্দোলন, মহাসড়ক ও থানা ঘেরাও—এসব এখন টঙ্গীর নিত্যদিনের ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছিনতাই রোধে জিএমপি আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার ফ্লাইওভারের পাঁচটি সিঁড়ির মধ্যে তিনটি বন্ধ করে দিয়েছে। আব্দুল্লাহপুর ও চেরাগআলীতে দুটি সিঁড়ি খোলা রেখে বাকি তিনটি সিঁড়ি আপাতত ইট দিয়ে প্রাচীর আকৃতির দেয়াল তুলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে খোলা রাখা দুটি সিঁড়িতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু ফ্লাইওভারের ওপর বা নিচে কোনো আলো বা সিসি ক্যামেরা না থাকায় ছিনতাইকারীরা সহজেই অপরাধ সংঘটিত করে পালিয়ে যাচ্ছে। তিনটি সিঁড়ি বন্ধ করলেও পুরো ফ্লাইওভারে এখনো আলো ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা হয়নি। শুধু সিঁড়ি বন্ধ নয়—আলো, সিসি ক্যামেরা ও নিয়মিত পুলিশি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এই অপরাধ দমন সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ–দক্ষিণ) মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ছিনতাই রোধে অস্থায়ীভাবে ফ্লাইওভারের তিনটি সিঁড়ি বন্ধ করা হয়েছে। ফ্লাইওভারে আলো ও সিসি ক্যামেরা না থাকায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদি ভালো ফলাফল পাওয়া যায়, তবে এটি চলমান রাখা হবে।’
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ