Publish: Sunday, 21 September, 2025, 5:59 PM

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মিথ্যার সঙ্গে লড়াই করা। এজন্য সাংবাদিকদের হতে হবে সৎ, সাহসী ও নিষ্ঠাবান। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাজীপুর প্রেস ক্লাবের তত্ত্বাবধায়কমন্ডলীর দায়িত্ব গ্রহণ ও ‘চব্বিশ-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
গাজীপুর প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক সভাপতি খন্দকার গোলাম সরওয়ারের সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম মাসুমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সোহেল হাসান, গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকরা।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ বলা হয়, সাংবাদিকরা সমাজের ওয়াচডগ। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়ন, খুন-গুম, দুর্নীতি ও অধিকার হরণের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার থাকতে হবে। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সত্য বলার সাহসিকতাই সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা কোনো দলের না, কোনো স্বার্থগোষ্ঠীর না। দলমতের উর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলার সাহসই সাংবাদিকতার প্রাণ।
বিএফইউজে মহাসচিব বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। অন্য তিনটি স্তম্ভ দুর্বল হলেও গণমাধ্যম শক্ত থাকলে রাষ্ট্র গণমুখী থাকে। কিন্তু, গণমাধ্যম নড়বড়ে হলে রাষ্ট্র বিপদগ্রস্ত হয়। তিনি এ সময় ফরাসি দার্শনিক অ্যালেক্সিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আমরা যেভাবে সভ্যতাকে বজায় রাখি, সেটাই হল মিডিয়া। এছাড়া তিনি আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসনের বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করেন- সরকারবিহীন সংবাদপত্র, সংবাদপত্রবিহীন সরকারের চেয়ে শ্রেয়।
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ১২১ বার তদন্ত প্রতিবেদন পেছানো হয়েছে, অথচ বিচার হয়নি। এটি কেবল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য লজ্জার। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এখনও কেন সাগর-রুনি হত্যার বিচার হবে না?
এছাড়া তিনি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বলেন, দেশে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধে ৩২টি আইন থাকলেও তাদের সুরক্ষার জন্য একটি আইন নেই। সাংবাদিকদের সুরক্ষা ছাড়া স্বাধীন গণমাধ্যম সম্ভব নয়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, হলুদ সাংবাদিকতা, অপসাংবাদিকতা ও দলদাস সাংবাদিকতা আজ প্রকৃত সাংবাদিকতাকে ম্লান করে দিচ্ছে। কিছু অসাধু কর্মকর্তা বগল সম্পাদকদের লালন করছে, ফলে প্রকৃত সম্পাদকরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আজও সংকুচিত।
বিএফইউজে মহাসচিব দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, মনে রাখবেন- গণমাধ্যমের পরাজয় মানে রাষ্ট্রের পরাজয়। গণমাধ্যমকে পরাজিত হতে দেয়া যাবে না। তথ্যই শক্তি, আর গণমাধ্যম এই শক্তির আধার।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, সততা ও পেশাদারিত্বকে হারিয়ে ফেললে সাংবাদিকতা হারিয়ে যাবে। তাই শতভাগ সত্য ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার বিকল্প নেই।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ