Publish: Friday, 1 August, 2025, 7:53 AM

ঘর থেকে টেনে বের করে বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন সিকদার লিটুকে (৪২) কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। এ সময় বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের ছোট ভাই, বোন ও বৃদ্ধা মা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলার কাশিপুরের বিল্ববাড়ি এলাকায় পারিবারিক বিরোধের জেরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এতে আহতরা হলেন- নিহতের ছোট ভাই সুমন সিকদার (৩৫), বোন মুন্নি বেগম (৩৮) এবং বৃদ্ধা মা। তাদের বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
লিটন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি রড-সিমেন্টের ব্যবসা করতেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজি, মারধর ও নারী সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ ছিল। এমনকি কয়েকদিন আগে নিজের ভগ্নীপতিকে গোপনাঙ্গে বিদ্যুৎ শক দেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে মামলায় আদালত থেকে জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরলে হামলাকারীরা লিটুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে। প্রথমে পুলিশের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে হামলাকারীরা আবার ফিরে এসে বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এরপর লিটন সিকদারকে ঘর থেকে টেনে বের করে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় লিটুকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে তার বোন মুন্নি, ছোট ভাই সুমন ও বৃদ্ধা মাকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। মরদেহ নেয়ার সময়ও হামলাকারীরা পুলিশের গাড়ি থামিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয় এবং শেষবারের মতো নির্মমভাবে কুপিয়ে তার একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং শরীরজুড়ে মারাত্মক জখম করে।
নিহতের পরিবার জানায়, লিটুর বোন মুন্নি বেগমের স্বামী জাকির হোসেন গাজী গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এই নিয়ে মুন্নি ও তার পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয় এবং উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিন পেয়ে মুন্নি ও তার ভাইয়েরা পুলিশের সহায়তায় বাড়ি ফিরলে জাকির ও তার লোকজন বাড়িতে হামলা চালায়।
নিহতের বোন মুন্নি বেগম জানান, জাকিরের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পরিবারে কলহ শুরু হয়। সালিশি বৈঠকেও দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এতে একপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে হামলার পরিকল্পনা করে।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হলেও তারা কোনো প্রতিরোধ গড়েনি। এমনকি উত্তেজনার সময় এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ঘটনাস্থলে ফিরে আসতে পুলিশের দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিসি-উত্তর) মো. রিয়াদ হোসেন জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রস্তুত হচ্ছে। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নজরদারিতে রেখেছে বলেও জানান তিনি।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ