এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৭৮ পেয়েছেন জাব্বারুল ইসলাম। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় এই ফল অর্জন করেন তিনি।
জাব্বারুল জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারেন না। হুইলচেয়ারের সাহায্যে তাকে চলাফেরা করতে হয়। বাঁকা হাতে লিখতে সমস্যা হয় তার। তবুও জীবনযুদ্ধে থেমে যাইনি। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ।
জাব্বারুল চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা বেলাল হোসেন একজন ভ্যানচালক, মা রশেনা খাতুন গৃহিণী।
শিশুকাল থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী জাব্বারুল ভাংবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (নাইট স্কুল) ভর্তি হয়। প্রথমে তার মা কোলে করে স্কুলে নিয়ে যেত। সে সময় একটি এনজিওর মাধ্যমে হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে দেয় গ্রামবাসী। জেএসসি পাশের পর জাব্বারুল ভাংবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। সেখান থেকেই এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ বলেন, অত্যন্ত নম্র-ভদ্র ও মনোযোগী ছাত্র জাব্বারুল। তার এই সাফল্যে আমরা গর্বিত এবং তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমরা দোয়া করছি।
জব্বারুলের মা-বাবা বলেন, ছেলের এমন ফলাফলে আমরা অত্যন্ত খুশি। আমরা চাই, সে যেন ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু অর্জন করতে পারে। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ তাকে কলেজে পড়ানো সামর্থ্য আমাদের নেই।
জব্বারুল বলেন, আমি পড়ালেখা বাদ দেব না। আমি যখন দশম শ্রেণীতে উঠি সে সময় সুইট এ গ্রোভেটের ডিরেক্টর শরিফুল হুদা রুনু আমাকে একটা স্মার্ট হুইলচেয়ার কিনে দিয়েছিল। তার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ওই স্মার্ট হুইলচেয়ারে করেই আমি চলাফেরা ও নিয়মিত স্কুলে যাওয়া আসা করি। পরীক্ষায় সময় ওই স্মার্ট হুইলচেয়ারে করেই পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েছি। তিনি আমার লেখাপড়ার সাহস যুগিয়েছেন।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ