আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য মোট ২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২ হাজার ৭২৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পরিচালন ব্যয় এবং ২২৯ কোটি ৫ লাখ টাকা উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে। যা গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) ইসির সংশোধিত বরাদ্দের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের সাধারণ ও উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা মাথায় রেখে এ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তব্যে এই প্রস্তাব তুলে ধরেন। সংসদ না থাকায় এবারের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হয়।
গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) ইসির সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ১৪১ কোটি ৮৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছরে অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইসির সংশোধিত বাজেট ছিল ৪ হাজার ৭৬৯ কোটি ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
এর আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটির সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪২৩ কোটি ১৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
তিনি উল্লেখ করেন, গত দেড় দশকে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয়েছে, তাই নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন, নীতিমালা ও আদেশ সংশোধন ও সংস্কারের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত এই অর্থে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ হাতে নেবে। এর মধ্যে রয়েছে দুইটি সিটি করপোরেশন, চারটি পৌরসভা, ১০টি উপজেলা, ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠান।
কেন্দ্রীয় ও মাঠপর্যায়ে জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপন ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম, পেপার লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রস্তুত, মুদ্রণ ও বিতরণ, স্মার্টকার্ড দেওয়া, শূন্য হতে ১৮ বছর বয়সের নীচে নাগরিক নিবন্ধন ও এনআইডি দেওয়া, এনআইডি সিস্টেমের (সিএমএস, বিভিআরএস, এএফআইএস, স্মার্টকার্ড প্রিন্টিং সফটওয়্যার) অডিট (আইএসও/সমপর্যায়ের) ও ডকুমেন্টেশন প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রবাসেই নিবন্ধন ও স্মার্টকার্ড দেওয়া, এনআইডি মিনি আর্কাইভ/লাইব্রেরী স্থাপন, কুমিল্লায় অবস্থিত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় তথা আঞ্চলিক সার্ভার স্টেশন ভবনে ফাংশনাল ডিআরএস (ডিজাস্টার রিকভারি সাইট) স্থাপন, এনআইডি সিস্টেমকে ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার (সিআইআই) বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর কমন প্লাটফর্মে সংযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সাইবার সিস্টেম স্থাপন, এনআইডির তথ্য যাচাই ও সনাক্তকরণ পার্টনার সার্ভিস অব্যাহত রাখা, এবং ইসির প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচনি ব্যবস্থাপনায় আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ