Publish: Saturday, 31 May, 2025, 12:47 PM

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে টানা চতুর্থ দিনের মতো বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা। জুলাই গণঅভ্যুত্থনে আহতদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার সকাল থেকে এ অচলাবস্থা শুরু হয়। ফলে প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
আজ শনিবার (৩১ মে) সকালেও হাসপাতালে কোনো চিকিৎসাসেবা চালু হয়নি। রোগী ও স্বজনরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও হতাশ হয়ে ফিরেছেন। আজিমপুর থেকে আসা আজিজ মিয়া বলেন, “সরকারি হাসপাতালে চারদিন ধরে সেবা বন্ধ। সরকার কী করছে? বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাহলে আমরা যাব কোথায়?”
চিকিৎসা চালু করতে গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সচিব, ছাত্র ও জুলাই যোদ্ধা প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হলেও কোনো সমাধান আসেনি। হাসপাতালের চিকিৎসাধীন জুলাই যোদ্ধা রোহান আহমেদ জানান, “চিকিৎসাসেবা পুরোপুরি বন্ধ। খাবার ও ওষুধ বাইর থেকে আনতে হচ্ছে।”
হাসপাতাল সূত্র জানায়, চিকিৎসক ও কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। জুলাই যোদ্ধাদের একটি অংশের সহিংস আচরণ, ভাঙচুর ও হামলার কারণে কর্মীরা আতঙ্কে আছেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম জানান, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কর্মীরা কাজে ফিরতে অনিচ্ছুক।”
চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তবে এখনও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। বর্তমানে হাসপাতালে ৫০ জন জুলাই যোদ্ধা ভর্তি আছেন। আত্মহত্যার চেষ্টা করা চারজন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে এবং একজন সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগে প্রায় ১৫০ জন সাধারণ রোগী হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।
ঘটনার পেছনের প্রেক্ষাপট
গত ২৫ মে চারজন আহত জুলাই যোদ্ধা সঠিক চিকিৎসার অভাবসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিষপান করেন। এরপর ২৭ মে পরিচালকের কক্ষে একজন নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেন। বুধবার (২৮ মে) হাসপাতাল চত্বরে কর্মী, রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটে, যার জেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
প্রসঙ্গত, জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১২০০–১৫০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। সেবা বন্ধ থাকায় এইসব রোগীকে এখন বিকল্প হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ