মহান বিজয় দিবস আজ। বাঙালি জাতির হাজার বছরের বীরত্বের এক গৌরবময় দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন। মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা। এরপর সর্বস্তরের মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধের প্রবেশদ্বার।
আজ দিনের শুরুটা হয়েছে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জাতিসত্তা আর লাল-সবুজের পতাকার সেই ঐতিহাসিক বিজয়ের মুহূর্ত স্মরণের মধ্য দিয়ে। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন শহীদ বেদীতে । এরপর সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস শহীদ বেদিতে ফুল দেন। শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ।
স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রর্দশন করে এবং বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার দেয় তিন বাহিনীর চৌকস দল।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী কূটননীতিক ও উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যরা।
এরপর স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনাদের শ্রদ্ধা জানাতে ঢল নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের। শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। নিশ্চিত করা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা।
১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি তারিখ ন বিজয়ের প্রতীক। ৭১-এর এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। মনে করিয়ে দেয়, এক নতুন সূর্যোদয়, পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। যা বাঙালি সত্তার প্রতিটি প্রজন্মের কাছে দেশপ্রেম ও দায়বদ্ধতার এক অবিস্মরণীয় বার্তা।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ