পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শুরু হয়েছে হাড়কাঁপানো শীতের দাপট। ভোরের কনকনে হিমেল হাওয়া আর আকাশজুড়ে ঘন কুয়াশা জনজীবনকে প্রভাবিত করছে ব্যাপকভাবে। সকাল থেকে জমে থাকা আর্দ্রতা ও হিমশীতল বাতাসে কাঁপছে তেঁতুলিয়ার সাধারণ নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন।
ডিসেম্বরের শুরুতেই ব্যাপকভাবে ঠান্ডার প্রভাব দেখা দিয়েছে এই অঞ্চলে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিকসহ অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ। ভোর রাত থেকেই নিজ নিজ কর্মস্থলের উদ্দেশে বের হতে হয় তাদের।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। গতকালও তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আজও একই তাপমাত্রা বিরাজ করছে।
সকালে কুয়াশায় আচ্ছন্ন পরিবেশ, শিশিরভেজা প্রকৃতি ও কনকনে ঠান্ডা স্থানীয়দের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাপকভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। সন্ধ্যার পর শীতের তীব্রতা আরও বাড়ছে, ফলে হাট-বাজারে শীতবস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে দৃশ্যমানভাবে। ব্যাপক শীত থাকায় শীত বস্ত্রের দামও বৃদ্ধি করে দিয়েছেন ক্রেতারা।
স্থানীয়রা বলেন, সাধারণত এই অঞ্চলে নভেম্বরের শুরুতেই শীত বাড়তে দেখা যায়। তবে কয়েক বছর ধরে আগাম শীতের আগমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এরই মাঝে নতুন ধান ঘরে ওঠায় গ্রামীণ জনপদে নবান্নের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পিঠা-পুলি এবং নতুন ধানের সুবাসে বাজার গুলোতে জমে উঠেছে ভোজন রসিকদের আড্ডা।
অন্যদিকে, তীব্র শীতের মাঝেও জীবিকার প্রয়োজনে সকাল থেকেই কাজে সন্ধানে ছুটছেন পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিকসহ ভ্যান ও রিকশাচালকরা। তাদের ভাষ্যমতে, শীতের তীব্রতায় সকালবেলার কাজ করা বেশ কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
পঞ্চগড় সদর হাসপাতালসহ উপজেলার ৫ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে দিনদিন। এই এলাকায় শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগও বাড়ছে। চিকিৎসকরা জানান, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি ও হাঁপানির রোগী সংখ্যা বাড়ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, শীত নামতে শুরু করেছে। ডিসেম্বরের প্রথম তারিখ থেকেই শীত তীব্র হচ্ছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ