রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫,
২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English हिन्दी

রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
জাতীয়
এক দশকে সেন্টমার্টিনের সৈকত-কৃষিজমি দখল দ্বিগুণ, পরিবেশ উপদেষ্টার হুঁশিয়ারি
অনলাইন ডেস্ক
Publish: Saturday, 6 December, 2025, 10:41 AM

গত এক দশকে সেন্টমার্টিনের সৈকত আর কৃষিজমি দখল হয়েছে আগের তুলনায় দ্বিগুণ হারে। পর্যটন খাত উন্নয়নের নামে দখল হয়েছে ৮৬ হেক্টর জমি। এ অবস্থায় দ্বীপের পর্যটন খাতের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যাচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর। আগামী বছর থেকে দৈনিক পর্যটকের সংখ্যা এক হাজারে সীমিত করার কথা ভাবা হচ্ছে। ভ্রমণের বিধি-নিষেধ মানা না হলে পর্যটন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা।

খোঁজ নিয়ে গেছে, নয়নাভিরাম সেইন্টমার্টিন দ্বীপের গলাচিপা এলাকায় একটি বড় জলাধার আছে। উত্তর ও দক্ষিণপাড়া মিলে রয়েছে তিনটি লেগুন। যেগুলো জোয়ারের সময় সাগরের পানিতে ডুবে থাকে। তব কয়েক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট স্লুইস গেটটি অকেজো হয়ে থাকায় ভাটার পানি আর নামতে পারছে না। 

এদিকে পর্যটকদের জন্য রিসোর্ট নির্মাণে প্রবাল কেটে নেওয়ায় উন্মুক্ত হয়ে গেছে সৈকত। এখানে বালু নুড়ি জমেছে। তাই সাগরের সাথে সংযোগ খাল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আটকা পড়া পানিতে ছড়াচ্ছে দূষণ। অথচ এই বিল একসময় স্থানীয়দের মাছের চাহিদা মেটাতো। দ্বীপের ভেতরের এমন সংযোগ সব খালগুলো এখন দখল।

আয়াতুল্লাহ আল খামেনি নামের স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, ‘বিচ ভিউ করার জন্য কেয়া গাছ কেটেছে, বালিয়াডি ধ্বংস করছে, নিশিন্দা কাটছে, আকদ কাটছে, পাথর তুলে হোটেলের সামনে সৌন্দর্য বর্ধন করেছে।’

গবেষকেরা বলছেন, সেন্টমার্টিন প্রবাল বেষ্টিত একটি পাথুরে দ্বীপ। এর চারপাশের প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা প্রবাল প্রাচীরই এর বেড়িবাধ। জোয়ারে পানিতে আসা মাছে এখানের উপ-হৃদ বা লেগুন পূর্ণ থাকত। এতে পাখি ও স্থানীয়দের মাছের চাহিদা মিটতো। তাই দ্বীপে সচল জলাধার বা লেগুন থাকা জরুরি। 

বন্যপ্রাণী গবেষক ড. রেজা খান বলেন, ‘উপ-হৃদ বা লেগুন যেটাকে বলে, সেটি সমুদ্র থেকে খালের মতো চলে আসছে, তারপর সেটি বিলের মতো ছড়িয়ে গেছে গ্রামের মধ্যে। সেই যে জায়গাটা সেখানেই গ্রামবাসী মাছ ধরত এবং এই মাছ ধরে আশপাশের মানুষদের খাবার হয়ে যেত। এ ছাড়া সেখানে কয়েক প্রজাতির বক থাকত, ডাহুক পাওয়া যেত, পানকৌড়িরা থাকত।’

পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, এক দশকে পর্যটন খাতের বিকাশের ফলে, দ্বীপটির আট ভাগ কৃষি জমি কমে গেছে। দ্বীপের মোট আবাসিক এলাকা ৪৫ হেক্টর থেকে বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৮৬ হেক্টরে। প্রতিবছরই বাড়ছে সৈকত আর প্যারাবনের দখল। তাই সংকটাপন্ন এই দ্বীপ রক্ষায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চায় সরকার। পর্যটন মৌসুমে এবছর প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটকদের ভ্রমণের অনুমোদন দিলেও আগামী মৌসুম থেকে তা কমে এক হাজার করা হতে পারে। 

পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে পর্যটন হবে, কিন্তু সেটা হবে নিয়ন্ত্রিত। প্রয়োজনে পর্যটন আরও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কিন্তু আগে তো সেন্টমার্টিনকে বাঁচিয়ে আনতে হবে। যে ব্যবসায়ীক গোষ্ঠী বলছে–আইন মানব না, তারা কিন্তু বাইরের লোক। তারা কেউ সেন্টমার্টিনের না। তাদেরকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে এর পরের নিষেধাজ্ঞার অংশে।’ 

সেন্টমার্টিনের উত্তর পাড়ের চার কিলোমিটার সৈকত এলাকা পর্যটকদের জন্য বরাদ্দ থাকছে। তবে দক্ষিণ পাড় থেকে ছেঁড়াদিয়া অংশে সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হবে আগামী বছর থেকে।

ডার্ক টু হোপ/এসএইচ 
মতামত লিখুন:
http://darktohope.org/ad/1763179181.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশে ৪ কোটি ২৫ লাখের বেশি শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হয়েছে: ইউনিসেফ
শ্রীলঙ্কায় বন্যা-ভূমিধসে নিহত বেড়ে ৬১৮, এশিয়াজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
হাসপাতালে ভর্তি নচিকেতা
৫ কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের শাহবাগ অবরোধ
বিটিআরসির সামনে অবরোধ, বিক্ষোভ মোবাইল ব্যবসায়ীদের
জাতীয়- এর আরো খবর
Email: [email protected]
© 2024 Dark to Hope
🔝