ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতক বেচাকেনার সময় দুই নারী প্রতারককে আটক করা হয়েছে। হাসপাতালটির আনসার সদস্যরা তাকে আটকের পর শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। আটক দুই নারী প্রতারকের নাম নাহার আক্তার ও তার বোন হাসিনা।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের ১০৬নম্বর ওয়ার্ড থেকে তাদের দুজনকে প্রথমে আটক করে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা। পরে সন্ধ্যার দিকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করে।
হাসপাতালটিতে ভর্তি নবজাতকটির মা কমলা বেগম (৩০) জানান, তার বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার বকশিগঞ্জ গ্রামে। অন্যের বাসায় কাজ করেন তিনি। তার স্বামী বাদশা মিয়া ৬-৭ মাস আগে তাকে রেখে অন্যত্র চলে গেছেন। গাজীপুরের গাজীপুরা বাস্তাপাড়া এলাকায় থাকেন কমলা।
তিনি আরও জানান, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন তার স্বামী চলে যাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। এরপর বিভিন্ন জায়গায় সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে চলছিলেন। ১৫ দিন আগে পরিচয় হয় ওই দুই নারীর সাথে। তারা একটি ক্লিনিকে কাজ করে। মূলত ক্লিনিকে এবরশন করায় তারা। তবে পরিচয় হওয়ার পর কমলাকে আশ্বাস দেয়, বাচ্চা জন্ম নেয়ার পর পালতে না পারলে তাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চা তারা কিনে নিয়ে যাবে। সেই কথাতে রাজিও হন কমলা।
এরপর গাজীপুর সদর পশ্চিম আরিচপুরে ওই দুই নারীর বাসাতেই রাখে কমলাকে। সেখানেই ক্লিনিকটি। ২৯ নভেম্বর তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করালে ওইদিন রাতেই সিজারিয়ান অপারেশনের পর ছেলে বাচ্চা ভূমিষ্ট হয়। তখন থেকে ওই দুই নারী হাসপাতালে সার্বক্ষণিক তার পাশেই ছিল। আজ দুপুরে বাচ্চা নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা হয় তাদের মধ্যে। তখনই মত পাল্টে যায় কমলার। বাচ্চা বিক্রি করবেন না বলে জানান কমলা। এতে মাথায় বাজ পড়ে দুই নারীর
ক্ষোভে তখন হাসপাতালের খরচ বাবদ ২২ হাজার টাকা দাবি করে ওই দুই প্রতারক নারী। সুস্থ হয়ে মানুষের কাছ থেকে সাহায্য তুলে তাদের টাকা পরিশোধ করে দিবে বলে জানান কমলা। তবে তাতে রাজি হয় না দুই নারী। টাকা না পেলে আজই বাচ্চা হাসপাতাল থেকে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে টাকা আদায় করবে বলে জানায়।
তখন নিরুপায় হয়ে কমলা হাসপাতালটির ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বরত আনসার সদস্যকে বিষয়টি জানালে তখনই ওই দুই নারীকে ওয়ার্ডের ভিতর থেকেই আটক করা হয়।
হাসপাতালের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানান, ২৯ নভেম্বর কমলাকে হাসপাতালে আনা হয়৷ ওই রাতেই তার সিজারিয়ান অপারেশনের পর ছেলে বাচ্চা ভূমিষ্ট হয়। পরদিন গাইনি ওয়ার্ড থেকে তাকে ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়।
এটি কমলার ২য় ছেলে সন্তান। ৬-৭ বছর আগে তার প্রথম ছেলে সন্তান নরমালে ভূমিষ্ট হওয়ার সময়ই মারা যায়। তার বাবা মা কেউ বেঁচে নেই৷ হাসপাতালে তাকে দেখাশোনা করার মতও কেউ নেই। বাচ্চা লালন-পালন নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা যায় তার মধ্যে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাটুন কমান্ডার মো. আলমগীর হোসেন জানান, দুপুরে হাসপাতালের ১০৬নম্বর ওয়ার্ড থেকে ওই দুই নারিকে আটক করে দায়িত্বরত আনসার সদস্য। পরে পরিচালকের কাছে নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যার দিকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মনসুর জানান, ওই দুই নারীকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। যতটুকু জানা গেছে, নবজাতককের মা নবজাতকটি দত্তক দিবে, তবে হাসপাতালে তাদের দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এরপরই তাদেরকে আটক করা হয়েছে। কেউ মামলা করতে রাজি নয়। তবুও বিষয়টি যাচাই-বাছাই চলছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ
বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, 
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
এভারকেয়ারের সামনে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
বৈদ্যুতিক তারের ওপর কাপড়, মেট্রোরেল চলাচল বিঘ্নিত
পানিতে ডুবিয়ে ৮ কুকুরছানা হত্যার অভিযোগে নিশি খাতুন গ্রেপ্তার
ইডেন কলেজ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
